যৌনতা মানুষের জীবনে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যার দ্বারা একজন নারী ও একজন পুরুষ শারীরিক, মানসিকভাবে চরম আনন্দ বা চরম পুলক লাভ করে। আমাদের দেশের অনেক অবিবাহিত যুবক এবং বিবাহিত পুরুষ যৌনবিজ্ঞান সম্পর্কে ভুল ধারণার কারণে বা সঠিক জ্ঞানের অভাবে বিভিন্ন যৌন সমস্যায় ভোগেন।
অথচ দেখা গেছে, তারা সুস্থ-স্বাভাবিক এবং ইচ্ছা করলেই তারা চূড়ান্ত তৃপ্তি পেতে পারেন। তাই যৌনবিজ্ঞান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণার বিকল্প নেই। যৌনতার যে বিষয়গুলো সম্পর্কে এ দেশের মানুষের মধ্যে ভুল বিশ্বাস ‘মহামারী’ আকারে আছে, সেগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করছি-
অকালে বীর্যপাত বা দ্রুত বীর্যপাত এটি বিবাহিত পুরুষদের একটি করুণ সমস্যা। অনেক পুরুষেরই অভিযোগ এটি। দ্রুত বীর্যপাতের মূল কারণগুলো হচ্ছে-
অত্যধিক উত্তেজনা, নার্ভাসনেস ও দুশ্চিন্তা
যৌন কৌশলের ব্যাপারে অপর্যাপ্ত জ্ঞান
ভেতরকার ভয় ও দ্বন্দ্ব? তাই এগুলো জয় করার চেষ্টা করুন।
প্রস্রাবে বীর্য বের হওয়া লিঙ্গের ছিদ্র দিয়ে প্রস্রাব ও বীর্য একই নালী দিয়ে বের হয়। এই নালীকে ইউরেথ্রা বলা হয়। অনেক সময় প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের নিচু অবস্থানের জন্য প্রস্রাবের সাথে সাদাটে বীর্য অল্প পরিমাণে নির্গত হতে পারে।
অনেক কবিরাজ বা হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত হলেও আসলে এটি কোনো সমস্যা নয়।
স্বপ্নদোষ বয়ঃপ্রাপ্তির পর থেকে শুরু হয়ে বিয়ের আগ পর্যন্ত এটি চলতে পারে। অনেক বালক বা যুবক স্বপ্নদোষকে অত্যন্ত ভীতিকর মনে করে থাকে। তাদের ধারণা, এটি তাদের দুর্বলতা। আসলে এটি প্রকৃতিগতভাবে শরীরবৃত্তীয় কারণে হয়ে থাকে। পুরুষের জীবনে স্বপ্নদোষ হবেই।
অন্তত একবার হলেও হবে। তাই ঘাবড়াবেন না বা ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই।
পাতলা বীর্য আমাদের দেশে বহু যুবকের অভিযোগ, তার বীর্য পাতলা হয়ে যাচ্ছে। ফলে সে পুরুষত্বহীন হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত সঠিক ধারণা হচ্ছে- বীর্যপাত হওয়া মনোদৈহিক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। শরীরবৃত্তীয় কারণেই বীর্য ঘন হোক আর পাতলা হোক, যখনই বীর্যপাত হওয়ার সময় হবে; তখনই তা হবে। সহজ কথায় পাতলা বীর্য বা ঘন বীর্যের ওপর বীর্যপাতের সময় নির্ভর করে না।
লিঙ্গ নিয়ে দুশ্চিন্তা? লিঙ্গের আকার-আকৃতি নিয়ে প্রায় সব পুরুষই দুশ্চিন্তায় ভোগেন। যেমন- লিঙ্গ ছোট, আগা মোটা গোড়া চিকন প্রভৃতি। স্বামীর লিঙ্গের আকারের ওপর স্ত্রীর যৌনতৃপ্তি নির্ভর করে না। যৌনতৃপ্তি নির্ভর করে যৌন কৌশলের ওপর।
জেনে রাখা দরকার, যৌনমিলনের আনন্দ পুরুষের লিঙ্গের সামনের এক ইঞ্চির মধ্যে আর মেয়েদের যোনির বাইরে এক ইঞ্চি গভীরতায় ও ক্লাইটোরিসে বা ভগ্নাঙ্কুরের মধ্যে পাওয়া যায়। লিঙ্গের আকার যৌন ব্যর্থতার কারণ নয়।
তাই নিজের যৌনক্ষমতা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন না। দেখবেন সব স্বাভাবিকই আছে। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও মানসিক বিষাদ ৮০ শতাংশ যৌনমিলনে ব্যর্থ হওয়ার জন্য দায়ী।